পঞ্চ শঙ্খের আরতি #
পাখিরা থেকে প্রকাশিত পাঁচজন কবির পাঁচটি
কবিতার বই এই আলোচনার লক্ষ্য। বইগুলি পড়তে পড়তে মনে হল সাম্প্রতিক প্রচার-সর্বস্ব লেখালেখি থেকে অনেক দূরে এই কবিতাগুলি এক অপূর্ব গরিমার অধিকারি। আত্মলীন-মগ্ন এই কবিতাগুলি জীবনের খুব গভীর থেকেই উঠে এসেছে। খুব সপ্রভ নয় আবার নিষ্প্রভও নয়; বরং শান্ত অনুগত এক লাবণ্য আরো বেশি
করে যাপনকে চেনায়, চেনায় অন্তস্তলকে। এই মরমী মন্থনের স্বাদ বারবার পেতে ইচ্ছে হয়।
আবীর সিংহ-র ‘মায়া’ কাব্যপুস্তিকাটির কবিতাগুলি পড়তে পড়তে মনের ভেতর
অপরূপ এক রং ছড়িয়ে পড়ে। কবি একেবারে উচ্চকিত নন বরং আলতো করে রেখে যান তার সুরেলা স্বরটিকে। আমাদের কাঁপায় না অথচ চঞ্চল করে, স্মিত আবেগে রণিত করে:
পুজোর সাজে দাঁড়িয়ে তুমি
মাথার ওপর কিছুটা আকাশ
যেন নশ্বরের পায়ে এক টুকরো শাশ্বত
(ফেসবুক)
কবি দেখছেন, শুধু দেখছেন আর একটু একটু করে গড়ে তুলেছেন
নীরব সৌন্দর্য-প্রতিমা, আরতির মতো শব্দহীন
অনুরাগ নিয়ে ছড়িয়ে পড়তে চাইছেন আমাদের নিথর অন্দরে:
যে কষ্ট তোমার তা আমারও
যে আলো আমার তা তোমারও
উৎসর্গপত্রে উল্লিখিত এই দুই পংক্তি
যেন বিরাট এক কবিতা একাকার হয়ে ছড়িয়ে পড়তে চায় মানবের নিভৃত কোলটিতে। সমগ্র মানবের ব্যথাকে এভাবেই তিনি নিজের করে নেন, নিজের ছন্দময় সঞ্চারকে ছড়িয়ে দেন:
খেলছে যে শিশুরা তারাও তো
খেলছে অনন্তকাল
খেলবে অনন্তকাল
এ খেলা থামে না কখনো
(বজ্রাহত)
বেদনার মাঝে এভাবে অনন্তকে সন্ধান করেন
কবি, টের পান অশ্রুর শিখা,
বাতাস আর আলোর গুঞ্জন । কবি তো আলোর প্রত্যাশী, অঞ্জলির আশায় উন্মুখ তাই বেদনাকে মেনে
নিতে হয় কিন্তু বিপর্যয় ছাপিয়ে অমেয় প্রাণের পৌরুষকে নিংড়ে নেন:
খোলা ছাদে দাঁড়িয়ে আছে পনেরোর দেবদাসী
মাথায় ওড়না ঢাকা। চুল নেই, জানি
কেমো চলছে। শ্রাবনের ভরা সন্ধ্যায়
ও এসে দাঁড়িয়েছে ছাদে। প্রায়ই দাঁড়ায়
আর আমি দেখি। মনে মনে বলি “সামনের শ্রাবনে
ফের চুলে ঢেকে যাবে মাথা। ঠিক ঢেকে
যাবে দেখো, দেখো দেবযানী
ভালো হয়ে যাবে তুমি...”
(প্রার্থনা)
আবীর সিংহ-র কবিতা এখানেই কবিতা থেকে আলোকযাত্রায় রূপান্তরিত হয়, সমস্ত ধ্বংস আর সংকট এই মহাযাত্রার কাছে নুয়ে পড়ে। আজ যখন
জীবনের চারধারে হৈ হট্টগোল, উদ্ভট মেধা আর ছন্দের কারিকুরি তখন এই কবি মাটির ঘরে
বসে শান্তির ধ্যানে মগ্ন। প্রচারমুখীনতা থেকে অনেক দূরে একটুকু মরমের ধ্বনি ইচ্ছা
হয়ে ঝরে পড়ে অবিরল:
আমার মৃত্যুটি
যেন মুছে যায়
শ্রাবণের অঝোর ধারায়
প্রীতি আচার্যের ‘এম এন নাইনটিন’ কবিতা পুস্তিকাটিতেও আবশ্যক
বাহুল্য বিস্তার নেই বরং সবখানেই ছড়িয়ে আছে সৌজন্যের গভীর দীপ্তি। একটু দূরে থেকেই
কবি জীবনকে দেখেন আর যাপনের শূন্যতাকে অনুভব করেন:
তোমার আমার মাঝখানে কোন প্রশ্নচিহ্ন
নেই
নেই ছেদ যতি
কোন অবাক রেখাও নেই
দাঁড়ি কমাহীন আমাদের এ সম্পর্ক
পূর্ণ কলসীর মত আশ্চর্য
নিস্তব্ধ
(সম্পর্ক)
প্রশ্নচিহ্ন নেই বলেই যে সম্পর্কের
ভেতরে প্রাণ নেই, তা নয় বরং প্রাণের আমোদকে কবি
অনুভব করেন নীরবতার ভেতর দিয়ে। তাই ‘পূর্ণ কলসী’ কথাটি কবি ব্যবহার করলেন, শূন্য নয়। এ সম্পর্কে বেদনার বিচ্ছুরণ আছে কিন্তু হতাশার
অগ্নিদহন নেই। কবি নাগরিক জীবনের গ্লানিতে দগ্ধ হয়ে বলে ফেলেন:
এখানে কোন বোধিবৃক্ষ নেই
নেই প্যপিরাসে সাজানো সবুজ অক্ষর
আছে ঘুঘুজন
(আমরা)
কবি আসলে বারবার খুঁজতে থাকেন
একটুখানি স্নিগ্ধতা, একটু শীতলতা কিন্তু বাইরের চিৎকার
ছলচাতুরী কবির সেই সন্ধানকে ক্ষত-বিক্ষত করে। দম্ভের আগ্রসন আর কপট মানুষের ভান জীবনের প্রকৃত স্পর্শটিকে
বুঝতে দেয় না:
আমাদের কোন উৎসব নেই
কিছু গল্পের সত্যের মত
এই নিতান্ত বেঁচে থাকা
(উৎসব)
প্রীতি আচার্যের কবিতা নাগরিক
জীবনের ক্লেদ আর মালিন্যের মাঝে প্রেম অন্বেষণের কবিতা। তীব্রভাবে ভালোবাসতে চান বলেই জীবনের মেকী অন্তঃসারশূণ্যতাকে এমন প্রগাঢ়
ভাবে উপলব্ধি করতে পারেন। এই তীক্ষ্ণ প্রাখর্যের আড়ালে কী শুনতে পাওয়া যায় না মৃদুতম কান্নার গুঞ্জন? কান্না আছে
বলেই প্রীতি আচার্যের অনুভূতি কখনো মিথ্যে হয় না, প্রতিটি দহনের মাঝে অমোঘ হয়ে জড়িয়ে থাকে যা এক প্রকৃত অভিসার:
কখন যে ফ্রকগুলো
প্রজাপতি হয়ে উড়ে গেল
আর আমি
আকাশ জড়ালাম গায়ে
(ছিন্ন পাতকী)
শীতলের কবিতাও ভালোবসার কথা বলে, যে ভালোবাসা আমাদের ভেতর থেকে চিনিয়ে দেয়, মানুষকে
শেখায় আরো তরুণ হতে। গ্রাম বাংলা মাটি মমতার মধুমাখা
উচ্চারণ তার কবিতায় আরো নিবিড় আরো স্মিত হয়ে ওঠে:
আকাশের জলে স্নান সেরে নিচ্ছে
প্রাচীন
বৃক্ষটি
তার নীচে থাকা দেবতারা
পাতা পড়ার শব্দ হয়
হাওয়া ওঠে
আজ কোথা থেকে সুর ভেসে আসছে
‘দুয়ার সিনির ফুল’ নামে এক ফর্মার কাব্যটির বিভাব কবিতাটিতে এমনই মন কেমন-করা মধুর আবেশের কথা বললেন। বড়োই নিবেদন-মাখা আর খুব আন্তরিক যেন গোপন এক প্লাবন তার সবটুকু প্রাচুর্য নিয়ে নিমজ্জিত হয়ে
আছে, পাঠককে আনমনে দেবে
দোলা, পাঠককে ভাসিয়ে
দেবে হারানোর আকুলতায়:
গাছের সঙ্গে গাছের বন্ধুত্ব
পাতিয়ে
দিতে পারি
আমগাছের সঙ্গে কাঁঠালগাছের
কাঁঠালগাছের সঙ্গে কাঁটা জামিরের
এক গাছের পাতা আরেক গাছের তলায় রেখে
আসি
তারপর রাতে অন্ধকারে চুপিচুপি গিয়ে
দেখি
গাছে ও তার বন্ধু পাতার ঘুমোচ্ছে কিনা
( ৪ সংখ্যক)
শীতল বিশ্বাস এভাবেই কবিতায় অন্তর্দীপ্তময়
বিশ্বাসকে স্থাপন করেন। অতি সহজ , অতি সরল তার উচ্চারণ অথচ পড়ামাত্রেই আবেশে আত্মলীন হতে হয়। অনবদ্য এক ঘোর ভালোলাগা হয়ে নিশ্চুপ হয়ে থাকে । শীতল অমোঘ এক বন্ধনের কথা বলেন, সম্পর্কের অভিযোজনের কথা বলেন,
অতি ধীর আর নম্র সে উচ্চারণ। কোন সংঘাত নেই, শুধু আছে সত্তাকে আলতো করে ছড়িয়ে যাওয়া, নশ্বর জীবনের দ্বারপ্রান্তে অবিনশ্বর মধুর এক ছোঁয়াকে রেখে যাওয়া আর আছে মানুষের প্রতি অনিবার্য দায়বদ্ধতা:
আল সাক্ষি আছে বীজ পুঁতেছি মাটিতে
ফসলের ভাগ বুঝে নেবে চড়াই শালিখে মাঠরাখা
ইঁদুরে
ভূবন বাগদী কোথায়? চাঁড়াল পুকুর পাড়ে
দুয়ার সিনির জন্য দুমুঠো চাইবে
(৫ সংখ্যক)
লৌকিক স্পন্দনে বিধুর কবিতাটি। পল্লী জীবনের অপরূপ অঙ্কন শীতলের হাতে
জীবন্ত হয়ে ওঠে । ধান, মাটি, ফুল, শিস, গাছ, লতা, ফসল, শস্যের সঙ্গে নিবিড় বন্ধনে
আশ্চর্য এক ওম জড়িয়ে থাকে কবিতায়। নিরাভরণ আটপৌরে এক উন্মোচন মাটির শ্রী
নিয়ে লাবণ্যময় হয়ে ওঠে ।
পাখিরা থেকে প্রকাশিত অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মিথ্যেবাদী হাওয়া’-তে জীবনের গৌরবই গভীর অনুভূতিতে আত্মলীন । কবি মহার্ঘতাকে কবিতা
করেছেন, পূজাকে নিয়ে এসেছেন বাণীর সংরূপে
। নিঃস্ব হওয়ার মধ্যে এক অজানা আনন্দ আছে , দুঃখ পাওয়ার মধ্যে এক আজনবী ঝঙ্কার । কবি চিরন্তন এই সত্যটিকে অগ্নিআখরে লিখেছেন, দেখিয়েছেন দারিদ্র না এলে শিবকে পাওয়া যায়না। দারিদ্র মনের খোলসকে চূর্ন করে, অন্তরকে নিয়ে যায় নিবিড় স্পর্শের অন্তরীপে। প্রকৃতকে খোঁজার আছিলায় রয়ে গেছে অনেক মিথ্যাচার , শুদ্ধতাকে ধারণের জন্য রচিত হয়েছে কাতর নিরর্থক অভিব্যক্তি অথচ কোথায় সেই অন্তরতমের উন্মীলন। একরাশ হাহাকার শুধু ফোঁপায় অচেনা আঙিনার মাঝখানে। এই সুগভীর ধ্যানকে কবি মেলে ধরেন:
অমন লাবণ্য ইতিহাস আমি কোথা পাই ? যা ছিল তা গিঁট খুলে
খুলে সবই দিয়েছি মেলে। তবে আর কীসের খোঁজে এই অতৃপ্ত সঞ্চার?
(গাহর্স্থ)
কবি তাই সমর্পণ লিখে রাখেন ভূর্জপত্রে। সবটুকুই তো উজাড় করে দিয়েছেন গিঁট খুলে , তবুও মনে হয়েছে কোথাও একটুখানি অতৃপ্তি যেন রয়ে গেছে। কবি ঝরতে চেয়েছেন অবিরল অথচ ঝরতে পারছেন না। এর কারণও অবশ্য পাই:
সর্বস্ব চাইবার কেই নই। আজ এই সন্ধ্যেবেলা একটু চুপ করে
বসো এইখানে । অমন চোখের পাতায় ফুলে পল্লবে অত শব্দ
ছিটিয়ো না
(শব্দের মাঝে)
এইবার বোঝা গেল। কবি যে অন্তর্মুখী। তিনি চিৎকার পছন্দ করেন না। তাই অভিমান ক্রমশ স্থায়ী হয়। চুপ করে থাকতেই যার ভালো লাগে , নীরব প্রতিমাকে অনুধ্যানই যাঁর আত্মার
ধর্ম তাঁকে বহির্বিশ্বের তুফান তো ক্ষতবিক্ষত করবেই। শিল্পের নামে শুধু ভণ্ড, উঞ্ছবৃত্তিদের জমজমাট জৌলুশে ক্লান্তি
আছে তা অনেক আগে থেকেই অনুভব করেছেন তাই আত্মসর্বস্বতার খেল যে আত্মহত্যার নামান্তর
একথা বুঝতে বাকী থাকেনি:
তামাম শব্দের মাঝে বড় একা লাগে। তোমার নীরব সাহচর্যটুকু
শীতল পাটির মত বিছিয়ে দাও এই বারান্দায়। আদি না অনাদি
মোহিনীমোহন তুমি শুধু শাড়ি জামাকাপড়
দিয়ে বুঝতে
চেয়োনা আর
(ঐ)
ঈশ্বরের অনুধ্যানই কবির একমাত্র বিধেয়। সুখ, অর্থ, বৈভবের ইঁদুর দৌড়ে,
যশখ্যাতির পাল্লাদৌড়ে অংশগ্রহণে কবির বড়ই অনীহা। তাই দুঃসহ আত্মগর্জন শেষে যখন শরীর জুড়ে ক্লান্তি নামে তখন কবি এসব থেকে অনেক দূরে
ঈশ্বরের মহীয়সী আলোতে প্রণত । তিনি দেখতে থাকেন ভালোবাসা, রঙ, আলোর এক অন্য
আকাশ:
একরত্তি লাউলতাটি আজ উঠোনেতে মাচা পেয়ে
খলখল হাসে
সাদা সাদা ফুল তার । সবুজ কোমল ফল। ঊর্ধ্বে তাকিয়ে দেখি
মাড়ুলি দেওয়ার মত একটি হাত রোজ গড়ে
অনন্ত আকাশ। ভরে আছে
ভরে ভরে উপচে পড়ছে বলে মনে হয়
(ভূমিকা)
এই দেখার দীপ্তি, অন্য রকমের ভাবনা ফুটে উঠপ্তে দেখি সঞ্চিতা
পাত্রের ‘’বিষণ্ণ পাখির চোখে’ কবিতা পুস্তিকাটিতে। তুলে ধরি বিভাব কবিতাটি:
বাঁকে বাঁকে মেঘভূমি
দুবে যায় নক্ষত্র; অপেক্ষা; উন্মুখ
পদতল
কীভাবে তোমার যাব
এখন প্রেমের কবিতা যত্রতত্র পড়ি। রতি আর রমণের ভারে ন্যুব্জ যখন শিল্প, ভোগবাদে আচ্ছন্ন যখন কবিতার দুনিয়া তখন এই কবি শোনালেন সম্পূর্ণ
ভিন্ন এক স্বর, প্রেমের মধ্যে দিয়ে ব্যক্ত হল আবহমান মানবাত্মার
চলাচল। ভাঙন নয়, অভিশাপ নয়, অনিবার্য আত্মঘোষণা নয় বরং উতরোল, উন্মুখ এক হৃদয়ের আরতি দিয়েই মানবের পোড়া অন্দরমহল। শুধু যাওয়ার আকুতি দিয়েই আলোময় হল এ নিখিল বিশ্ব। খুব গভীর বিশ্বাসে ভর করে সঞ্চিতা প্রেম
কে অনুভব করেন:
তুমি সেই গাছ, শিরায় শিরায় জলের উপোস
তবু মাটি ছেড়ে চলে যাওনা কোথাও
( গাছ)
প্রেমের ক্ষয় আর বিকার যখন ঘনিয়ে আসে, যাপনের হাহাকার যখন আকাশ বিদীর্ণ করে,
সম্ভোগের চোরা দাপট যখন ঝুটা অন্তরকে ঝাপটা মারে তেমনি ভয়াবহ সময়ে এই
কবি রচিত করলেন প্রেমের ভিন্ন উড়ান। বিশ্বাসকে সঙ্গী করে চির সূর্যের দিকে
তার অভিযাত্রা। তিনি বড় শান্তিতে
আনন্দ আঁকলেন:
পাতায় পাতায় আনন্দ
চোখের বাইরে তার ঝয়া পাতাগুলি
রঙ নেই রূপ নেই ; শুধু মৃতদেহ
পুরনো পাতার বোঁটায় নতুন উন্মুখ
(পাতা)
রূপহীন, রঙহীন ঝরাপাতা কবির কাম্য নয়। তার কাম্য চোখের পাতায় লেগে থাকা আনন্দ, পুরোন পাতার বোঁটায় নতুন উন্মুখ। নব পলাশের ফূটে ওঠাটি কবির লক্ষ্য, পুরনো পাতার ঝরে যাওয়ার প্রতি নয়। অপেক্ষা আর ধ্যান কবিকে এই পূর্ণতা
দেখায়:
এমনও হয় আমি পথ চেয়ে থাকি
তুমি আসবে , তুমি পথ চেয়ে থাকো
সে আসবে
(অপেক্ষা)
আসা-যাওয়ার পথের ধারে ফুটে ওঠা চিরন্তন ব্যাকুলতাকে ঘিরেই একটি অপেক্ষার প্রস্তুতি, আরো সহজ হয়ে গভীর হয়ে ছড়ায় চেতনমূলে। কবি নিরীক্ষণ করেছেন ঐ বিনীত চাওয়াটুকু কেমন করে একাকার হয়ে ওঠে আঁখিতারায়
আর একটু একটু করে কখন উজাড় হয়। কবি অবুঝ অভিমানে লীন হয়ে যেতে চেয়েছেন:
কিছুই দেবার নেই
শুধু আছি, এই আশ্বাস টুকু
ক্রিয়ারও প্রতিক্রিয়া নেই
শুধু একটি ময়ূর পালক
অভিমানে আরো নীল হয়ে যায়
(অভিমান)
সঞ্চিতা পাত্রের কবিতায় এই ভাবে আনন্দেরবেদনা
মাধুর্যের আভা নিয়ে ছড়িয়ে থাকে। এই আভা ভালোবাসার আবার অপেক্ষারও। যেন এক অতন্দ্র জাগরণ মৃদু মন্থন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় নিরবধি। পরম আর প্রণয় একই অঙ্গে গাঁথা হয়ে ফুটিয়ে
তোলে প্রীতিকুসুম।
আলোচিত গ্রন্থ ঃ
মায়া/ আবীর সিংহ/ পাখিরা
এম এন নাইনটিন/ প্রীতি আচার্য/পাখিরা
দুয়ারসিনির ফুল/ শীতল বিশ্বাস/ পাখিরা
মিথ্যেবাদী হাওয়া/ অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়/পাখিরা
বিষন্ন পাখির চোখে/ সঞ্চিতা পাত্র/ পাখিরা
No comments:
Post a Comment